মোঃ রিপন মিয়া ,সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি ঃ কলেজ শিক্ষকের সাথে প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে প্রবাসী ছেলের বউয়ের হাতে খুন হলেন শাশুড়ি তহুড়া বেগম (৫৫)। মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) রাত ১১ টার দিকে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জামশা ইউনিয়নের ছোট বরুন্ডী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে । নিহত তহুড়া ওই গ্রামের সোনামুদ্দিন বিশ্বাসের স্ত্রী।
পুলিশ বুধবার (১০ জানুয়ারি) ভোরে নিহত শাশুড়ি তহুড়া বেগমের মৃতদেহ উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছেন। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই আল মামুন বাদী হয়ে আইরিন আক্তার (২১) ও তার প্রেমিক ঝিটকা খাজা রহমত আলী ডিগ্রী কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক লাল মুদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পুলিশ ছেলের বউ আইরিন আক্তারকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করেছেন ।
নিহতের পারিবারিক ও মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, গত তিন মাস আগে নিহতের ছেলে রাসেল বিশ^াসের সাথে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের আলগীরচর গ্রামের সিদ্দিক মোল্লার মেয়ে অভিযুক্ত আইরিন আক্তারের বিয়ে হয়। সপ্তাহ খানেক আগে নিহতের ছেলে বিদেশে চলে যাওয়ায় বউয়ের পরকীয়ার ঘটনা টের পান। এ নিয়ে বউ-শাশুড়ির মধ্যে পারিবারিক দ্বন্দ্ব চলছিল। ঘটনার রাতে আইরিন দুধ গরম করার অজুহাতে পাশের রুমে গিয়ে ফোনে প্রেমিকের সাথে কথা বলছিল। এ সময় শাশুড়ি তার ফোনালাপ শুনে ফেলায় দুজনের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। এক পর্যায়ে ছেলের বউয়ের হাতে থাকা টর্চ লাইট দিয়ে শাশুড়ির মাথায় বারি দেয়। এরপর চাকু দিয়ে উপর্যুপুরি আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। লাশ ঘর থেকে অন্যত্র সরানোর সময় শব্দে পাশের রুমে থাকা শ^শুড়ের ঘুম ভেঙ্গে যায়। এতে সে এগিয়ে এলে তাকেও আইরিন আক্তার চাকু দিয়ে আঘাত করে। এতে সোনামুদ্দিন বিশ^াসের ঠোঁট কেটে যায়। এ সময় তার ডাক চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে আইরিনকে আটকে রেখে পুলিশকে খবর দেয়।
মামলার বাদী আল মামুম জানান, বিয়ের ২ মাস পরেই আইরিনের সাথে কলেজ শিক্ষক লাল মুদ্দিনের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক প্রকাশ পায়। এ নিয়ে পারিবারিক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এ অবৈধ সম্পর্কের যথেষ্ট প্রমাণও রয়েছে বলে জানান তিনি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিংগাইর থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) এনামুল হক বলেন, খবর পেয়ে আইরিনকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তারসহ হত্যায় ব্যবহৃত টর্চ লাইট, চাকু ও রক্তমাখা শাড়ী উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিংগাইর থানার ওসি মো. জিয়ারুল ইসলাম বলেন, আসামী আইরিন আক্তারকে স্বীকারোক্তিমূলক জবাব বন্দীর জন্য আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে বাকী আসামীকেও গ্রেপ্তার করা হবে।